লিসবনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস “শেখ রাসেল দিবস ২০২৩” উদযাপন উপলক্ষে একটি সেমিনারের আয়োজন করেছে

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

লিসবনবুধবার১৮ অক্টোবর ২০২৩

বাংলাদেশ দূতাবাস, লিসবন যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে আজ (১৮ অক্টোবর ২০২৩) “শেখ রাসেল দিবস” উদযাপন করেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর কনিষ্ঠ সন্তান শহিদ শেখ রাসেল-এর ৬০ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানটি পালিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে পর্তুগাল প্রবাসী বাংলাদেশিগণ, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেত-কর্মীবৃন্দ, পর্তুগালের মানবাধিকার সংগঠন Fundacão de Assistencia Médica Internacional (AMI) এর বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী Mrs. Tania Barbosa এবং Mrs. Ana Luisa Ferreira অংশ গ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে পর্তুগালে নিযুক্ত বাংলাদেশের মান্যবর রাষ্ট্রদূত রেজিনা আহমেদ ও দূতাবাসের কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ এবং প্রবাসী বাংলাদেশী বিভিন্ন সংগঠণের নেতা ও কর্মীগণ শহিদ শেখ রাসেল-এর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। অতঃপর, শহিদ শেখ রাসেলসহ জাতির পিতা, তাঁর পরিবারের অন্যান্য শহিদ সদস্য ও শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং দেশের অব্যাহত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। এরপর দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। রাষ্ট্রীয় নেতৃত্ব কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ শেষে শেখ রাসেল-এর জীবনের উপর নির্মিত একটি প্রামান্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে, Fundacão de Assistencia Médica Internacional (AMI) এর বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী যথাক্রমে মিজ আনা লুইসা ফেরেইরা ও মিজ তানিয়া বারবোসা বক্তব্য রাখেন। মিজ আনা লুইসা ফেরেইরা তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ শিশু ও নারীর অধিকার সংরক্ষণে অনেক কাজ করেছে। তারা উভয়েই শেখ রাসেলের হত্যাকাণ্ড আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও শিশু অধিকার সনদের চরম লঙ্ঘনের সমতুল্য বলে মন্তব্য করেন এবং শেখ রাসেলের হত্যাকারীদের অবিলম্বে বিচারের আওতায় আনার দাবী তোলেন।

লিসবন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জনাব শিব কুমার “শেখ রাসেল দিবস ২০২৩” অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, সারা বিশ্বে শিশুদের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে শেখ রাসেল দিবস পালন করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন এবং শিশুদের অধিকার সংক্রান্ত কনভেনশনের কথা উল্লেখ করে তিনি মন্তব্য করেন যে, রাসেল হত্যার ন্যায় বিচারের মধ্যে দিয়ে সারা বিশ্বের লাখ লাখ নিপীড়িত শিশুদের অধিকার আদায়ের পথ উন্মোচিত হবে।

অতঃপর, দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণে শহিদ শেখ রাসেল-এর জীবনের উপর এক আলোচনা পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এতে আলোচকগণ মত প্রকাশ করেন যে, যদি শেখ রাসেল বেঁচে থাকতেন, তবে জাতি একজন দূরদর্শী নেতা পেত। বক্তারা স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি কর্তৃক শেখ রাসেল-এর নৃশংস ও বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেন।

রাষ্ট্রদূত রেজিনা আহমেদ তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্টের সকল শহীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। রাষ্ট্রদূত গভীর দুঃখের সাথে বলেন যে, সেদিন ১০ বছরের নিষ্পাপ শিশু রাসেলও খুনিদের হাত থেকে রেহাই পায়নি। রাসেল যদি বেঁচে থাকতো, তাহলে হয়তো মহানুভব, দূরদর্শী ও আদর্শ নেতা আজ আমরা পেতাম, যাঁকে নিয়ে দেশ ও জাতি গর্ব করতে পারতো কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধী, ষড়যন্ত্রকারী ও বিশ্বাসঘাতকরা তা হতে দেয়নি। রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, শিশু রাসেলকে খুন করার মাধ্যমে পৃথিবীতে সংঘটিত হয়েছে সবচেয়ে ঘৃন্য মানবতা বিরোধী অপরাধ। বর্তমান পৃথিবীতে বিদ্যমান সকল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও সংশ্লিষ্ট কনভেনশন অনুযায়ী ১০ বছরের নিষ্পাপ শিশু রাসেল হত্যা মানবতার চরম লংঘন ও মানবতাবিরোধী অপরাধ। তিনি আরও মন্তব্য করেন যে, বিশ্বের কোনও শিশুর এই ধরণের বর্বরতার মুখোমুখি হওয়া উচিত নয়। তিনি দেশের উন্নয়নের স্বার্থে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান।